শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রকাশিত : ৬:৩০ অপরাহ্ন শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
সিনিয়র রিপোর্টার,দেশবাংলা ডটনেট
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে জ্যামিতিক হারে বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা।বছরের এ সময়েই মুলত দেশী বিদেশী ভ্রমণ পিপাসী পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে।কক্সবাজার নিয়ে এ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কক্সবাজারের বিভিন্ন বিষয়।কক্সবাজার শহর এবং আশপাশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা গেল,পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহরে যানজটের প্রভাবে পর্যটকদের কিছু সমস্যা হলেও কক্সবাজার নিয়ে আশাবাদী স্থানীয় লোকজন এবং ব্যবসায়ীরা।সরেজমিন প্রতিবেদনে দেখা গেল, কক্সবাজার শহর কেন্দ্রীক সী বীচের তুলনায় ইনানী মেরীন ড্রাইভ সড়কের অংশে ভ্রমণেই পর্যটকরা আগ্রহী হয়ে উঠছে।নিরিবিল এবং পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ পরিবেশের কারনেই দিন দিন মেরীন ড্রাইভ অংশে ভ্রমণে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন পর্যটকরা।
কক্সবাজার শহরে বীচ স্পট যেমন সুগন্ধা পয়েন্ট,লাবণী পয়েন্ট এবং সী ক্রাউন পয়েন্টে কিছু ছিন্নমূল এবং পথশিশুর উৎপাত লক্ষণীয়।ভিক্ষুকের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয় যাতে পরিবার পরিজন কিংবা প্রিয়জন নিয়ে ভ্রমণে আসা পর্যটকরা বিব্রত হয়।
ইনানী মেরীন ড্রাইভ সড়কে ঘুরে দেখা গেল প্রচুর দেশী বিদেশী পর্যটকের আনাগোনা।পর্যাপ্ত নিরাপত্তার কারনে পর্যটকরা শহর ছেড়ে ইনানী রোডে ঘুরতে বেশী পছন্দ করে।
কিছুক্ষণ পর পর টুরিস্ট পুলিশের টহল চোখে পড়ার মত।
এছাড়াও কিছু দুরত্ব পেরোলেই চোখে পড়ে বিভিন্ন ক্যাফে,রেস্টুরেন্টে যেখানে পর্যটকরা তাদের ইচ্ছে মত সকল ধরনের খাবার পাচ্ছেন বলে আগের মত এদিকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের খাবারের দু:শ্চিন্তা নেই বললেই চলে।
তাছাড়াও এখানে গড়ে উঠেছে ভাল মানের বিভিন্ন রিসোর্ট যেখানে ইচ্ছে করলেই পর্যটকরা নিরিবিলি পরিবেশে প্রিয়জনদের নিয়ে রাতকাটাতে পারে।
ইনানী মেরীন ড্রাইভ সড়কে অবস্থিত ম্যারমেইড ক্যাফের কর্মকর্তা রেশাদ বলেন’আমরা চেষ্টা করি সকল ধরনের গ্রাহকদের সন্তোষ্ট করতে,এখানে পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী থাকার এবং খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে,তবে সী ফুডের চাহিদা বেশী,দেশী এবং বিদেশী মিলিয়ে গড়ে প্রায় এক হাজার পর্যটক আমাদের সেবা গ্রহণ করে থাকেন’।
তিনি বলেন,মুলত একটু নিরিবিলিতে সময় কাটাতে চায় এরকম ক্লাসিক্যাল পর্যটকদের চাহিদা এদিকে দিন দিন বাড়ছে।আর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থার বিদেশী নাগরিকদের আনাগোনাও একটু বেশী’।
চট্রগ্রাম থেকে ঘুরতে আসা ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবীদ ওচমান আলী বলেন,কাজের ফাঁকে সময় পেলেই কক্সবাজারে চলে আসি,যেহেতু কক্সবাজার শহরে অনেক কোলাহল তাই শহরের বাইরে এদিকে আমার ভাল লাগে,খাবার এবং থাকার খরচটা দিন দিন বাড়ছে বলে আক্ষেপ করে তিনি বলেন,এক সময় আমরা বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরতে আসতাম তখন থাকা খাওয়ার খরচ অনেক কম ছিল যা এখন অনেকগুণে বেড়ে গিয়েছে,তিনি সরকারের বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ ব্যাপারে নজরদারী বাড়িয়ে সবকিছুর একটা সহনীয় মূল্য নির্ধারনের দাবী জানান’।
চট্গ্রামের কেরানীহাট থেকে আসা ব্যবসায়ী নুরনবী বলেন’ব্যবসার কাজে যখনই আসি কাজের ফাঁকে চেষ্টা করি একটু ঘুরে ফিরে নিজেকে রিফ্রেশ করতে’।
কক্সবাজার বার্মিজ মার্কেটের ব্যবসায়ী এরশাদুল্লাহ বলেন’আমরা পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী দেশী বিদেশী মালামাল দোকানে রাখার চেষ্টা করি এবং মূল্যও ক্রেতা সাধারনের নাগালের মধ্যে রাখার চেষ্টা করি যদিও কক্সবাজারে খরচ একটু বেশী তাই আমাদেরও কষ্ট হয়’।
ইনানী মেরীন ড্রাইভে ভ্রমণে আসা একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর সাত্তার আঙ্গুর অনেকটা অভিযোগের সুরেই এ প্রতিবেদককে বলেন’এখানে মোবাইল ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন নজর নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন,দেখেন আমার হাতে প্রায় সব কোম্পানীর সীম আছে এবং সব কোম্পানীর নেটওয়ার্কের অবস্থা খুবই দুর্বল এবং ইন্টারনেটতো ব্যবহারই করতে পারছিনা,একটা গুরুত্বপুর্ণ মেইল পাঠাতে চেষ্টা করছি অনেক্ষণ ধরে কোনভাবেই ডেলিভার হচ্ছে না,মোবাইল ফোন কোম্পানীগুলোর এ বিষয়ে আরো গুরুত্ব দেয়ার দরকার’।
আর কিছুদিন পরেই দেশী বিদেশী পর্যটকের ভীড়ে মুখরীত হবে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত এবং বাংলাদেশের প্রধান পর্যটন নগরী কক্সবাজার।দোহাজারী থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত বিস্তৃত প্রস্তাবিত রেল লাইন তৈরী হয়ে গেলে পর্যটকের সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে যাবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।উল্লেখ্য,ইতিমধ্যেই রেল লাইনের কাজ দৃশ্যমান।