রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

ইউসেট’ মূল্যায়ন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত, পুরস্কার পাচ্ছেন দশজন শিক্ষার্থী

প্রকাশিত : ৬:০৪ পূর্বাহ্ন রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ উল্যাহ`র ব্যক্তিগত উদ্যোগে ‘ইউসেট’ নামে গত ২০ আগস্ট ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত মূল্যায়ন পরীক্ষার ফলাফল আজ প্রকাশিত হয়েছে।

জানা যায়, এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজি ১ম পত্র ও ২য় পত্রের উপর মোট ৮০ নম্বরের এই মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার Uno Lohagara এর ফেসবুক পেইজে আজ সোমবার এই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়।

প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, অধিকাংশ পরীক্ষার্থী আশানুরূপ ফলাফল অর্জন করতে পারেনি। লোহাগাড়া উপজেলার নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষার্থীরা এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীই এই মূল্যায়ন পরীক্ষায় খারাপ করেছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আগাম ঘোষণার প্রেক্ষিতে এই পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের দুইজন করে সর্বমোট দশজন শিক্ষার্থীর নামও ফলাফলে প্রকাশিত হয়েছে। আমিরাবাদ জনকল্যাণ (বালক) উচ্চ বিদ্যালয় এর ছাত্র প্রিয়াংশু বড়ুয়া সুষ্ময় ৭০.৫ নাম্বার পেয়ে ঐ প্রতিষ্ঠানে প্রথম স্থান, নাইম উদ্দিন মাশকুর ৭০ নাম্বার পেয়ে ২য় স্থান, দক্ষিণ সাতকানিয়া গোলামবারী সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সানজিদা ইসলাম ৬৯.৫ নাম্বার পেয়ে ঐ প্রতিষ্ঠানে ১ম স্থান, সায়মা সুলতানা মিম ৬৯ নাম্বার পেয়ে ২য় স্থান, শাহপীর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র মোস্তাহিদ আবরার মাহি ৬৯ নাম্বার পেয়ে ঐ প্রতিষ্ঠানে ১ম স্থান, মনিরুল আহসান জামি ৬৪ নাম্বার পেয়ে ২য় স্থান, মোস্তফা বেগম গার্লস স্কুলের ছাত্রী আসমাউল হুসনা ৬৭ নাম্বার পেয়ে ঐ প্রতিষ্ঠানে ১ম স্থান, তাহমিনা তানরিন ৬২ নাম্বার পেয়ে ২য় স্থান, আমিরাবাদ জনকল্যাণ (বালিকা) উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী কোয়েল চক্রবর্তী ৬১ পেয়ে ঐ প্রতিষ্ঠানে ১ম স্থান, তাহমিনা সুলতানা এনি ৫৭ নাম্বার পেয়ে ২য় স্থান অধিকার করেছে। এই শিক্ষার্থীগণকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পক্ষ থেকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হবে। পুরস্কার প্রদানের তারিখ ও সময় পরবর্তীতে জানানো হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এধরণের উদ্যোগকে শিক্ষার্থী, শিক্ষকমহল, অভিভাবক ও সচেতন সমাজের জনগণ ব্যাপক ইতিবাচকভাবে দেখছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তাদের মতে, এটি একটি অসাধারণ এবং নজিরবিহীন উদ্যোগ। এতে করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের ভুল-ত্রুটি শুধরে ভালো পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে। শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব পালনে অধিকতর সচেতন হবেন। এছাড়া পরবর্তী ব্যাচগুলো স্যারের এই উদ্যোগের কারণে পড়াশুনায় ব্যাপক মনোনিবেশ করবে। শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যেও সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অতিদ্রুততার সাথে এই পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করায় ছাত্র-ছাত্রীরা দ্রুত তাদের দুর্বলতা নিয়ে কাজ করতে পারবে। এই জন্য তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ধন্যবাদ জানান। ভবিষ্যতে এধরণের উদ্যোগ চলমান থাকবে বলেও তারা প্রত্যাশা করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ উল্যাহ জানান, আগামী সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সিলেটের বন্যার কারণে পরীক্ষা প্রায় তিন মাস পিছিয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা অনেকে এখন ঠিকভাবে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করছে না। তাদেরকে বইমুখী করা এবং তাদের প্রস্তুতিকে শাণিত ও ত্বরান্বিত করার জন্যই মূলত এ ধরনের একটি মূল্যায়ন পরীক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে খাতাগুলো যথাযথভাবে মূল্যায়ন করে আমরা ফলাফল প্রকাশ করতে পেরেছি। আমাদের কয়েকজন সম্মানিত শিক্ষক পরীক্ষক হিসেবে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। অনেক কর্মকর্তা নিরলস পরিশ্রম করেছেন। সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ফলাফল দৃষ্টে দেখা যায়, অধিকাংশ পরীক্ষার্থী আশানুরূপ ফলাফল অর্জন করতে পারেননি। তবে আমি বিশ্বাস করি, যেহেতু এটি কোনো বোর্ড পরীক্ষা বা সার্টিফিকেট অর্জনের পরীক্ষা নয় সেহেতু মন খারাপ করার কিছু নেই। এই পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দুর্বলতা চিহ্নিত করে ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমরা খাতাগুলো শিক্ষার্থীদেরকে দিয়ে দিবো। যাতে তারা তাদের ভুলগুলো বুঝতে পারে। এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ফলাফলের ভিত্তিতে তাদের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করতে পারে। এতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উভয়ে লাভবান হবে। সর্বোপরি এধরণের উদ্যোগে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা পাওয়া গেলে লোহাগাড়ায় মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা অত্যন্ত সহজ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

আরো পড়ুন