প্রকাশ: ২০২০-০৩-০১ ২৩:৩৯:৩৩ || আপডেট: ২০২০-০৩-০১ ২৩:৩৯:৩৩
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা, অপরাধ দমন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনকালে কর্তব্যরত অবস্থায় বিগত বছরগুলোতে মৃত্যুবরণকারী (নিহত/মৃত) পুলিশ সদস্য’দের স্মরণে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ উদযাপন উপলক্ষে ১ মার্চ চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইন্স ‘সিভিক সেন্টারে’ এক আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের মাননীয় ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, বিপিএম(বার), পিপিএম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাহবুবর রহমান, বিপিএম, পিপিএম। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: সাহাব উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ।
এ অনুষ্ঠানের শুরুতেই দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনকালে নিহত পুলিশ সদস্য’দের বিদেহী আত্মার প্রতি দাড়িয়ে সম্মান জ্ঞাপন এবং ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, পিপিএম-সেবা। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর সাথে শাহাদাত বরণকারী পরিবারের সদস্য’দের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে ২৫শে মার্চ ১৯৭১ সালের কালো রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে শহীদ ৩৬ জন পুলিশ সদস্য, তৎকালীন চট্টগ্রাম জেলার দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে শহীদ ৮১ জন পুলিশ সদস্য এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে মৃত্যুবরণকারী সকল বীর শহীদ’দের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনকালে নিহত পুলিশ সদস্য’দের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং তাদের যেকোন প্রয়োজনে পাশে দাড়ানোর প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাহবুবর রহমান, বিপিএম, পিপিএম বলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে অনেক পুলিশ পরিবারের সদস্য’গণ বহু কষ্টে দিনাতিপাত করছে। তিনি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনকালে নিহত পুলিশ সদস্য’দের পরিবার’কে পুণ:র্বাসন করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেন। তিনি বলেন জাতির প্রতিটি ক্লান্তিলগ্নে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছেন। তাদের এ অবদান কখনো বৃথা যাবেনা। তাদের উত্তরসূরী পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিহত’দের পরিবারের মঙ্গলে কাজ করে যাবে। তিনি নিহত পুলিশ পরিবারের যেকোন সদস্য’কে প্রয়োজনে দায়িত্বরত ইউনিটে যোগাযোগ করার পরামর্শ প্রদান করেন।
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার নিহত পুলিশ সদস্য’দের স্মরণে এ ধরণের একটি দিবস পালনের সিদ্ধান্ত’কে যুগান্তকারী পদক্ষেপ মর্মে আখ্যায়িত করেন। তিনি অনুষ্ঠানে আগত নিহত পুলিশ সদস্য’দের পরিবারের সদস্য’দের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনকালে নিহত পুলিশ সদস্য’দের শহীদ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের অকুতোভয় পুলিশ সদস্য’দের বীরত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও জাতির প্রয়োজনে পুলিশ সদস্য’রা এ ধরণের সাহসী ভূমিকা পালন করবেন মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি জনাব খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম(বার), পিপিএম বলেন দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে গিয়ে নিহত পুলিশ সদস্যরা প্রকৃত অর্থে মৃত নয়। তারা পুলিশ বাহিনীর কাছে অমর। পুলিশ মেমোরিয়াল ডে প্রবর্তন তাদের আত্মা’কে অমরত্ব দান করেছে। যতদিন এ বাংলাদেশ থাকবে পুলিশ বাহিনীর সদস্য’রা তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত নিহত পুলিশ সদস্য’দের পরিবারবর্গ’কে যেকোন প্রয়োজনে থানা, জেলা ও রেঞ্জ প্রধানের শরণাপন্ন হওয়ার অনুরোধ করেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি এ অনুষ্ঠানে ২১ জন নিহত পুলিশ সদস্যের পরিবারের মধ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন।
Comments
Add Your Comment