শনিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রকাশিত : ১:৪৯ পূর্বাহ্ন শনিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মোটরসাইকেল চুরির নাটক সাজাতে এসে বাদীরাই ফেঁসে গেলো।এ ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। ঘটনার পরপরই কলাউজানের ইউপি সদস্যরা পালিয়ে যায়। গত সোমবার রাত ১টায় এ ঘটনাটি ঘটে।আটককৃতরা হলেন, কলাউজান হাছিলা মহাজন পাড়া ইদ্রিছ মোল্লার বাড়ি কামাল উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩০), মো. মাহফুজ (২৩) ও মো. রেজাউল (৩০)।
এ ঘটনায় কলাউজান ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. সালাউদ্দিন (৩৮) ও ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. রহিম (৩৭) কে আসামী করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বান্দরবানের লামা সরই আমতলী এলাকার গোলাম ছোবহান ফকিরের ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিক (৩২) মঙ্গলবার সকালে লোহাগাড়া থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১১ জনকে বিবাদী করা হয়।
জানা যায়, বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই (কেয়াজু পাড়া) আমতলী পাড়া সেলিমের দোকান সংলগ্ন এলাকা থেকে সোমবার রাতে মামলার বাদী আবু বক্কর ছিদ্দিককে প্রতিপক্ষরা আপহরণ করে মোটর সাইকেল চোর সাজিয়ে মারধর করে লোহাগাড়া থানায় হস্তান্তর করেন। একটি চুরির মামলার এজেহারও দায়ের করেন থানায়।
রাতেই লোহাগাড়া থানার ওসি মো. জাকের হোসাইন মাহমুদের নেতৃত্বে এসআই সামছুদ্দৌহা সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ ঘটনার কোন সুরহা না পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই তিনজনকে আটক করেন। তিনজন আটকের পরপরই থানা থেকে পালিয়ে যায় ২ ইউপি সদস্য।
এদিকে, লামার কেয়াজু পাড়া পুলিশ ফাঁড়ির একটি টিম আবু বক্কর ছিদ্দিককে অপহরণের বিষয়টি জানতে পেরে খোঁজ খবর নেন। পরে তারা লোহাগাড়া থানা পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরে ঘটনা পাল্টাতে থাকে। অবশেষে থানা হাজত থেকে মুক্তি মেলে ছিদ্দিকের। অপহরণ মামলার আসামী হতে হয় চুরির ঘটনা সাজানোর সাথে জড়িতরা।
মামলার বাদী আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, বাগির পাশে দোকান থেকে চোখ বন্ধ করে মারধর করে গাড়িতে তুলে পেলেন। মাঝপথে এসে চোখ খুলে দেন। সিএনজি নিয়ে লোহাগাড়ার কলাউজানে নিয়ে যায়। সেখান থেকেও মারধর করে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশ চুরির কোন সত্যতা পাননি। আমাকে সম্মান জানিয়ে ছেড়ে দেন।
তিনি আরো বলেন, মুলত জায়গা জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আমাকে অপহরণ করে চুরির নাটক করে থানায় সোপর্দ করেন। পুলিশের বিচক্ষনতায় নাটকের অবসান হয় এবং তিনজনকে আটক করে মামলা দায়ের করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
অপহরণ মামলায় অভিযুক্ত কলাউজান ইউপিস সদস্য মো. সালাউদ্দিন সিকদার বলেন, অপহরণের ঘটনার সাথে আমি মুঠেও জড়িত নয়। আমি যেহেতু জনপ্রতিনিধি আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি ষড়যন্ত্র মাত্র।
কেয়াজু পাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদশক আবুল হাসেম জানান, মুলত জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ছিদ্দিকের সাথে মারামারির ঘটনা ঘটে। রাতেই ছিদ্দিককে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে উদ্ধারের তৎপরতা শুরু করি। ঘটনাটি খুবই নগন্য।
লোহাগাড়া থানার ওসি মো. জাকের হোসাইন মাহমুদ জানান, লোহাগাড়ার কলাউজান ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সালাউদ্দিন ও রহিম উদ্দিনসহ কয়েকজন ব্যক্তি আবু বক্কর ছিদ্দিক নামের এক ব্যক্তিকে টেন হিঁছড়ে মোটর সাইকেল চুরি করছে বলে থানায় নিয়ে আসে। বিষয়টি সন্দেহ হলে তদন্ত করে ঘটনাটি তদন্ত করা হয়। ঘটনাটি মিথ্যা প্রমাণীত হওয়া উপক্রম হলে ২ মেম্বার পালিয়ে রক্ষা পেলেও তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। চুরির নাটক সাজাতে এসে অপহরণ মামলায় তারা এখন ফেঁসে গেল।