গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ হামলা ও হত্যা মামলায় সাত জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। মামলার অপর এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুর ১২টায় ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি হলেন- ওই হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, আবদুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, জঙ্গি মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন, শফিকুল ইসলাম ওরফে খালেদ, হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর (জঙ্গি অভিযানে নিহত) সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ এবং গুলশান হামলার অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি সদস্য হাদিসুর রহমান সাগর।
রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে।
এ সময় জাপান দূতাবাসের একটি প্রতিনিধি দল আদালতে উপস্থিত ছিল।
এর আগে সকাল সোয়া ১০টার দিকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের আদালতে আনা হয়। এরপর ঢাকা দায়রা জজ আদালতের হাজতখানা থেকে তাদেরকে এজলাসে হাজির করা হয়।
রায় ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে আদালত পাড়া। পাশাপাশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে রাজধানীসহ সারাদেশে।
গত ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় ভয়াবহ ও নৃশংস জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দেশি-বিদেশি ২০ জন নাগরিককে নির্মমভাবে হত্যা করে সশস্ত্র জঙ্গিরা।
জঙ্গিদের ছোড়া গ্রেনেডে দুই ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা মারা যান। একপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। এ ছাড়া ওই ঘটনার সময় রেস্তোরাঁর একজন শেফ মারা যান।এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর তদন্ত শেষে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট গত বছরের ২৩ জুলাই হামলায় জড়িত ২১ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
আলোচিত এই মামলায় ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর ওই বছরের ৩ ডিসেম্বর মামলার বাদী এসআই (উপপরিদর্শক) রিপন কুমার দাসের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে মামলার বিচার শুরু হয়। মামলায় ২১১ সাক্ষীর মধ্যে ১১৩ জন সাক্ষ্য দেন।
এর মধ্যে ১৩ জঙ্গি বিভিন্ন সময়ে অভিযানে নিহত হওয়ায় মামলার বিচার থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়। বাকি আটজনের বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয়।
গত ১৭ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে ২৭ নভেম্বর (আজ) রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন বিচারক।