সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রকাশিত : ৮:৪২ অপরাহ্ন সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
লোহাগাড়া প্রতিনিধিঃ
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মুহাম্মদ আহসান হাবীব জিতু বলেছেন,এই মাস মহান বিজয় দিবসের মাস। আমরা মুক্তিযোদ্ধা দেখিনি, তবে মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার ৫০বছর উদযাপন করেছি এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। আমরা এ মাসে মহান বিজয় দিবস খুব আনন্দঘণ পরিবেশে উদযাপন করবো । দেশ প্রেমকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।
পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে বাঙালী জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন জাতির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির পিতার সুযোগ্য নেতৃত্বে এদেশ স্বাধীনতা পেয়েছি। তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আধুনিকীকরণ করেছিলেন।তোমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশকে রক্ষা করবে এটাই আজ আমাদের প্রত্যাশা। আমাদের ভিতরে দেশপ্রেম জাগ্রত করার। এখন অনেক মানুষ স্বাধীনতার বিপক্ষে কথা বলে।আমরা এসব মানুষকে ধীক্কার জানাচ্ছি। তোমরাই এদেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম। তোমাদের নিয়ে এদেশ অনেক স্বপ্ন দেখছে। দেশপ্রেমকে উদ্ধুদ্ধ করলে তোমাদের মন জাগ্রত হবে।
৫ ডিসেম্বর সকালে উপজেলার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পদুয়া এসিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের হল রুমে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো তুলে ধরেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা গোলাম রসুলের সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে বক্তব্যে রাখেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার মুহাম্মদ আবদুল হামিদ বেঙ্গল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ রফিক দিদার,পদুয়া এসিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মুহাম্মদ নুরুল ইসলামসহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা বৃন্দ।
এসময় মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন নানা গৌরবময় ইতিহাস স্মৃতিচারণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা এবং যেকোনো অপশক্তির বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা অবিচল থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক দিদার বলেছেন,মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ৮ম শ্রেনীর ছাত্র। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন পদুয়া স্কুল মাঠে আসছিলেন তখন মাঠে আমি গান করেছিলাম। আমার গানে মুগ্ধ হয়ে অনেকজন সম্মানি দিতো। রাজাকারের দল আমাকে হানা দিতে বার বার চেষ্ঠা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধে আমি অংশগ্রহণ করতে ছুটে গিয়েছিলাম। ভারতে চলে গিয়েছিলাম। ওখান থেকে এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলাম। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস গুলো তোমরা জানবে। তোমাদের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। মুক্তিকামী বাঙালি জাতিকে যার যা আছে তা-ই নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু।
লোহাগাড়া উপজেলা ডেপুটি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ বেঙ্গল বলেছেন,ত্রিপুরা রাজ্যে পৌঁছে গিয়েছিলাম। ১নং সেক্টরে ভারতের হরিণা ক্যাম্পের হেড কোয়ার্টার চট্টগ্রামের বিভিন্ন মুক্তিযুদ্ধকে সাথে নিয়ে সেখানে আমরা সম্মিলিত হয়ে ক্যাম্প করেছিলাম। সেখানে আমরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছিলাম। আমি ইকো কোম্পানীর প্রথম ব্যাচ। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে একটা টিম গঠন করা হলো । ২নং সেক্টরে ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া ৩৫জনের একটি গ্রুপ মিলে ক্যাম্প গঠন,করি। আমার ক্যাপ্টেন ছিলেন মতিউর রহমান, ক্যাপ্টেন হামিদুর রহমান, ক্যাম্পেন অলি আহমদ। আমরা ফেরী হাট পার হয়ে বড় বড় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পাক বাহিনীদের পরাজিত করেছি। আমি ১১জন নিয়ে একটি গ্রুপ গঠন করেছিলাম। রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী , পটিয়া,আনোয়ারা, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া রাজাকারের ক্যাম্প ধ্বংস করে দিয়েছিলাম।
বিভিন্ন স্হানে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলাম। তাই তোমাদের এসব ইতিহাস জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সঠিক ইতিহাসও তোমাদেরকে জানাতে হবে।
স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নেন উত্তর দেন মুক্তিযোদ্ধারা।