প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ২২, ২০২৪, ৯:২৯ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯, ৯:৩২ এ.এম
মায়ের পাশেই চির নিদ্রায় শায়িত হবেন মেজর জেনারেল আবেদীন
সেনাবাহিনীর বিশেষ বিমানে আসবে লাশ
শহীদুল ইসলাম বাবর, দেশবাংলা.নেট
হেলিকপ্টার যোগে নিজ গ্রাম চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতিতে মায়ের কবরের পাশেই শায়িত করা হবে মেজরজ্নারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের নিতর দেহ। এর আগে সেনাবাহিনীর বিশেষ বিমানে করে চুনতীতে পৌঁছানো হবে তার লাশ। তার পর আসরের নামাজের পর পরই ১৩ একর বিশিষ্ট চুনতির ঐতিহাসিক সীরত ময়দানে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। মরহুমের ফুফাত ভাই চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য আনোয়ার কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরিমধ্যে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে হেলিপ্যাড তৈরির কাজ শেষ হয়েছে বুধবার বিকালে। মায়ের কবরের পাশ ঘেঁষেই খনন করা হয়েছে কবর।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য আনোয়ার কামাল জানান, ১৯৭৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মা মেহেরুন্নেছা মারা যান। পারিবারিক কবরস্থানে দাপন করা হয়। এর পরের বছরই ১৯৮০ সালের ১৬ ডিসেম্বর মারা যান তার বাবা ইসহাক মিয়া। তিনি চুনতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন তাকেও পারিবারিক কবরস্থানে মায়ের কবরের পশ্চিম পাশে দাফন করা হয়। আর আজ মায়ের কবরের পাশ ঘেঁষেই কবরস্থ করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। লোহাগাডার সার্বিক উন্নয়নে দীর্ঘদিন থেকে ভূমিকা রাখা এ সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুত্ শোকের ছায়া বিরাজ করেছে পুরো লোহাগাডা জুড়ে।
গত মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ১৩মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গতকাল বুধবার তার মরদেহ দেশে আনা হয়।আজ সকাল ১০ টায় ঢাকা সেনানিবাসে নামাজে জানাজা শেষে হেলিকপ্টারে করে লাশ লেহাগাডায় পৌঁছবে।
জানা যায়,১৯৬০ সালের পহেলা জানুয়ারি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি মুন্সেফ বাজারের পশ্চিম পাশে সিকদার পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন জয়নুল আবেদীন। পিতা মরহুম ইছহাক মিয়া ও মাতা মরহুমা মেহেরুন্নিছা। ছাত্র জীবনে চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদরাসায় পড়ালেখার হাতেখড়ি। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৭৫ সালে এসএসসি ও ১৯৭৭ সালে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। দুই বছর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হন। পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৯৯৫-৯৬ সালে দায়িত্ব পালনকালে তার সাহসী নেতৃত্ব, বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতার কারণে অনেক জটিল সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব হয়। দেশের প্রতি নির্ভয় আত্নত্যাগ, পাহাড়সম মানসিক দৃঢ়তা ও দেশ সেবার মহান ব্রত বিবেচনায় তাকে মর্যাদাপূর্ণ ‘বীর বিক্রম’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
একজন চৌকস সেনা অফিসার হিসেবে তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ও কর্মদক্ষতার কারণে শান্তিরক্ষী মিশন থেকে ফিরে আসার পর তাকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে এসএসএফ এর মহাপরিচালক পদে অধিষ্ঠিত করা হয়। এপ্রিল মাসে মেজর জেনারেল পদে তিনি পদোন্নতি লাভ করেন। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব হিসেবে তিনি দায়িত্বরত ছিলেন।
© দেশ বাংলা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত