শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রকাশিত : ১:৩৮ পূর্বাহ্ন শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
দীর্ঘ তদন্তে ঠিকানাও খুঁজে পায়নি পুলিশ। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটও তার হদিস পায়নি। তবে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এলো পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি টিম। চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ইয়াবা ডন হিসাবে পরিচিত আবুল কাশেম ওরফে শাহীনকে (২৮) রোববার রাতে পাকড়াও করা হয় তার বাড়ি থেকে।
কক্সবাজার জেলার রামুর ঈদগড় গ্রামে পিবিআই’র পাতা ফাঁদে ধরা পড়ে এই ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী। পিবিআই বলছে, ২০১৩ সালে কক্সবাজারে বাসের হেলপার থেকে ডাকাত দলের সোর্স হিসাবে অপরাধ জগতে তার পথচলা শুরু। মাত্র কয়েক বছরে শাহীন বনে গেছেন ইয়াবা ডন। স্কুল শিক্ষককে নববিবাহিত স্ত্রীর সামনে গুলি করে হত্যা, ডাকাতি, অপহরণ, ইয়াবা পাচারসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
চলতি বছরে ২ ফেব্রæয়ারি চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় ‘আনন্দ ভ্রমণ’ ব্যানার লাগানো একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে এক হাজার ১৫০ প্যাকেটে ভর্তি ২৩ কেজি ইয়াবার বিশাল চালান উদ্ধার করে পুলিশ। মূলতঃ ইয়াবা পাচারের সুবিধার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিতে পিকনিকের ব্যানার লাগানো বাসে ইয়াবার চালান পাচার করছিলো তারা।
চাঞ্চল্যকর মামলাটি তদন্তকালে ইয়াবাসহ গ্রেফতার আতিয়ার রহমান, বাসের চালক মোঃ জুয়েল রানা ও মোঃ ইকবাল হোসেন চালানের মূলহোতা হিসাবে কাশেমের নাম প্রকাশ করে। তারা আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে কাশেমের নির্দেশেই তারা চালানটি পাচার করার কথা জানায়। কিন্তু বাকলিয়া থানা পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ কাশেম ও তার সহযোগী রাজুর ঠিকানা পাওয়া যায়নি- এমন অজুহাতে চার্জশিট থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করে আদালতে। তবে আদালত দাখিলকৃত অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে অব্যাহতি দেওয়া আসামিদের বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআই, চট্টগ্রাম মেট্রোকে নির্দেশ দেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন পিবিআই পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবীর। তিনি বলেন, বিশেষ ফাঁদ ফেতে রোববার রাতে ইয়াবা ডন কাশেমকে পাকড়াও করা হয়। তার আগে অপর আসামি দেলোয়ার হোসেন ওরফে রাজুকেও গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এনায়েত কবীর বলেন, কাশেম ২০১৩ সালে ঈদগড় ঈদগাঁও-বাইশারী সড়কে হিল লাইন সার্ভিসের বাসের হেলপার ছিলো। হেলপারের আড়ালে সে ডাকাত দলের সোর্সের কাজ করত। তার তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাত দল সড়কে গাছ ফেলে বাসে ডাকাতি করত এবং যাত্রীদের অপহরণ করে পাহাড়ের নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করতো। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে কাশেম হেলপারের চাকুরি ছেড়ে পাহাড় গিয়ে সরাসরি ডাকাত দল গড়ে তোলে।
এরপর সে প্রতিদিন কোন না কোন বসতবাড়ি, সড়কে ডাকাতি ও অপহরণ শুরু করে। তার বিরুদ্ধে রামু থানায় ডাকাতি ও অপহরণের মামলা রয়েছে। কাশেমের নেতৃত্বে ডাকাত দল ঈদগড় বড়বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জনপ্রিয় সহকারি শিক্ষক নুরুচ্ছফাকে শয়নকক্ষে নববিবাহিত স্ত্রীর সামনে গুলি করে হত্যা করে। পরবর্তীতে কাশেম দেশে-বিদেশে সৃষ্ট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মাদক সা¤্রাজ্যে গড়ে তোলে জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন ছদ্মনামে ইয়াবা সরবরাহ, পরিবহন ও বিপণন কাজে লিপ্ত হয় সে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে