শহীদুল ইসলাম বাবর,দেশবাংলা.নেট
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়নের রেগঘাটা এলাকা থেকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হয় আমজাদ হোসেন প্রকাশ আমজু মিয়া(৫৫)। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর মধ্যখানে অতিবহিত হলো দেড় মাসের অধিক সময়। এ দীর্ঘ সময়েও আমজু মিয়ার কোন সন্ধান মিলাতে পারেনি পুলিশ। মধ্যখানে জনতার সহায়তায় এজাহার নামীয় দুই আসামী আটক, তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও ধৃত আসামীরা একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। তবে নিখোঁজ আমজু মিয়ার সন্ধান এখনো পুলিশের অজানা। তিনি কি বেচে আছেন? নাকি মারা গেছে সেটিও নিশ্চিত নয় পুলিশ। ফলে ভিকটিমের পরিবার ও স্থানীয়দের মাঝে বিরাজ করছে ক্ষোভ আর হতাশা।
অজানা আশংকায় শঙ্কিত তারা। এরি মধ্যে আছে আসামীদের অব্যাহত হুমকি।এহেন পরিস্থিতিতে অনেকটা নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করতে হচ্ছে নিখোঁজ আমজাদের পরিবারকে। গতকাল বুধবার সকালে চন্দনাইশ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরির্দশন ও স্বাক্ষীদের সাথে কথা বলেছেন। স্বজনদের অভিযোগ এ ঘটনায় জড়িত এজাহার নামীয় আসামীদের গ্রেপ্তারে তৎপর নয় পুলিশ। অনেক আসামী ঘুরছে প্রকাশ্যে। অপরদিকে আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অনিহা থাকলেও বাদী ও বাদীর পরিবারকে হয়রানী করতে বেশ পটু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আমির হামজা। থানায় মামলা না নেয়া সত্তেও আদালতে মামলা করায় বেশ ক্ষেপেছেন তিনি। ইতিমধ্যে মামলার বাদী ও তার বৃদ্ধা মাকে বেশ কয়েক বার বাড়িতে গিয়ে হুমকি, বাদী সহায়তা করা লোকজনকে আটক করে মারধরেরও অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ভিকটিমের পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য ও পুলিশের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, পিতা নিখোঁজের ঘটনায় ভিকটিমের ছেলে মোহাম্মদ আলমগির বাদি হয়ে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করিলে আদালত এ অভিযোগটিকে এজাহার হিসেবে গন্য করার জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়। বর্তমানে এ মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। মামলা তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন ধোপাছড়ি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এস আই মো. আমির হামজা। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত অর্থাৎ ২৩ সেপ্টেম্বর ভোর রাত আনুমানিক ৪টার সময় চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়নের চাপাছড়ি এলাকার মৃত হাজি মোহাম্মদ ইসমাইলের পুত্র আমজাদ হোসেন প্রকাশ আমজু মিয়াকে ফোন করে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার কথা বলে ডেকে নিয়ে যান একই ইউনিয়নের নুরুল আমিন প্রকাশ কালা আমিন। এর পর থেকে আর ফিরে আসেনি আমজু মিয়া। স্থানীয় ভাবে অনেক খোজাখুজি করেও কোন সন্ধান না পাওয়ায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর চন্দনাইশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী দায়ের করেন। ডায়েরী নং-১১১৫। এ ঘটনার পর ঐ দিনই স্থানীয় লোকজন নুরুল আমিন প্রকাশ কালা আমিনকে আটক করে থানায় সোর্পদ করলে পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কোর্টে প্রেরণ করেন। এরিমধ্যে নিখোজ আমজু মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ আলমগির বাদি হয়ে চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এর আদালতে সি আর (২৫৫/১৯) নং মামলাটি দায়ের করলে আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গন্য করার জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে চন্দনাইশ থানায় মামলাটি এজাহার হিসেবে গন্য করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. আমির হামজা বলেন, আসামীরা আমজু মিয়ার নিখোঁজ সর্ম্পকে জানেনা উল্লেখ করে একে অপরকে দোষ দিচ্ছে। বিষয়টি আমি আদালতে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। এদিকে মামলার বাদী মোহাম্মদ আলমিগর অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তারের চাইতে আমাদের হয়রানী করতে বেশি সময় ব্যায় করছে। আসামীদের গ্রেপ্তার করতে না পারলেও আমাদেরকে গ্রেপ্তারের হুমকি দিচ্ছে। আর আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। পুলিশের এমন ভ‚মিকায় আমি পুরো পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। মামলার তদন্ত ও ভিকটিম উদ্ধারের প্রচেষ্টা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আমির হামজা বলেন, মামলা তদন্ত চলছে এখন এর বাইরে আর বেশি কিছু বলা যাচ্ছেনা। ভিকটিম উদ্ধারের অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সময় লাগবে’।