বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রকাশিত : ১:৫২ অপরাহ্ন বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
রায়হান সিকদারঃ
অবশেষে লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডস্থ আনজু বাপের পাড়ায় সমাজচ্যুত সেই মনু মেস্ত্রীর পরিবারকে পুণরায় সমাজে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমাজপতিরা।এক ঘরে করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়। সমাজপতিরা তাদের দোষ ও ভূল স্বীকার করেছেন শালিশী বৈঠকে।
২৮ জুন সকালে ভুক্তভোগি মনু মেস্ত্রী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ টি আমলে নিয়ে দ্রুত সমাধানের জন্য বড়হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান কে নির্দেশনা প্রদান করেন।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার,অফিসার ইনচার্জ লোহাগাড়া থানার ওসি মুুহাম্মদ আতিকুর রহমানের নির্দেশে বড়হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের কাছে শালিশী বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের জন্য বলেন।
একইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে বড়হাতিয়া ইউপির কার্যালয়ে বড়হাতিয়ার সকল ইউপির সদস্যরা মিলে আনজু বাপের পাড়ার সর্দারসহ সমাজপতিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ইউপি সদস্যদের মধ্যে ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মুুহাম্মদ ওসমান গণি, মুুহাম্মদ মামুনুর রশিদ চৌধুরী,আজিজুর রহমান, মুহাম্মদ সোহেল,কাইছার হাসান বাপ্পী, আবু বক্কর সিদ্দিক রানা, মুহাম্মদ রফিক উদ্দিনসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গগণ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাজপতিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এলাকার সর্দার আবুল হোসেন,সর্দার মুুহাম্মদ আবদু্ল হাকিম মেস্ত্রীসহ অন্যান্য সমাজপতিরা।
বৈঠক শেষে সমাজপতিরা কবরস্থান কেনাকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য নিজেদের ভূল ও দোষ স্বীকার করে নেয়। মনু মেস্ত্রীর পরিবারকে সমাজে ফিরিয়ে নেয়।
এলাকার সর্দার মুুহাম্মদ হোসেন জানান,আমরা আমাদের ভুল স্বীকার করে একঘরে করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছি। মনু মেস্ত্রী আমার নাতিন জামাই। তার উপর আমাদের আর কোন দুঃখ নেই। তিনি সমাজে তার পরিবারকে নিয়ে সুন্দরভাবে থাকতে পারবেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুুহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান,সমাজচ্যুত বিষয়ে এ ধরণের ঘটনা দুঃখজনক। কেউ দোষ করলে আইন আছে। তবে, সমাজ থেকে একটি পরিবারকে সমাজচ্যুত করে হেয়পন্ন, অপমান করা হয়েছে। সমাজপতিরা তাদের ভুল, দোষ স্বীকার করেছে।আমরা সবাই বসে ৩০০টাকার একটি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।
বড়হাতিয়া ইউপির চেয়ারম্যান বিজয় কুমার বড়ুয়া জানান, সমাজচ্যুত সংক্রান্তে মনু মেস্ত্রী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করলে বিষয়টি আমাকে ইউএনও মহোদয় দ্রুত সমাধানের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। আমি সকল মেম্বারদেরকে সাথে নিয়ে সমাজপতিদের (সর্দারগণ) ডেকে ইউপি কার্যালয়ে শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করা হয়। মনু মেস্ত্রীর পরিবারকে সমাজেই থাকবে। তবে, সমাজের সচেতন মানুষকে এ ধরণের কাজ থেকে বিরত থাকলে তিনি সকলকে অনুরোধ জানান।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) শরীফ উল্যাহ জানান, দেশের প্রচলিত আইনের বাইরে গিয়ে সমাজের সর্দাররা এ ধরণের কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।সমাজপতিরা এটা ভুল করেছে। সমাজচ্যুত পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মহোদয়কে সমাধানের জন্য নির্দেশ দিয়েছি। বিষয়টি সমাধান হওয়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান।
সমাজপতিরা তাদের ভূল স্বীকার করে মনু মেস্ত্রীর পরিবারকে সমাজে ফিরিয়ে আনায় তার পরিবার ইউএনও, ওসি ও বড়হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।