মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রকাশিত : ৩:০২ পূর্বাহ্ন মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের জঙ্গল পদুয়া এলাকার ছৈয়দ আহমেদের মেয়ে মিনু আরা বেগম (৩৮)। স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে ১৫ বছর আগে শশুর বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন বাপের বাড়িতে। পরবর্তীতে বাপের বাড়ি ছেড়ে ওঠেন ভাড়া বাসায়। এরপর থেকেই শুরু হয় মিনুর সংগ্রামী জীবন। মানুষের বাড়িতে গৃহস্থালি কাজ করে যা পেতেন তা দিয়ে কোনোমতে চলতো মা-মেয়ে দুজনের সংসার। কাজ করে যেখানে দুমুঠো দুবেলা আহার জোগাতে হিমশিম খেতো হতো সেখানে মাথার উপর চেপে বসে বাসা ভাড়ার টাকা। স্থায়ীভাবে মাথা গোঁজার জায়গা পেতে যখন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিলেন মিনু, তখনই তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে লোহাগাড়া থানা পুলিশ। আর এরই মধ্য দিয়ে পুলিশের বদান্যতায় ঘর নিয়ে স্থায়ীভাবে দুঃখ মুচলো তার।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে উপজেলা সদর ইউনিয়নের উকিলের পাড়ায় এই নারীকে তিন শতক জায়গাসহ সেমিপাকা বসতঘর উপহার দিয়েছে পুলিশ। তিন কক্ষ বিশিষ্ট বাড়িতে রয়েছে রান্নাঘর ও শৌচাগার, দুটি করে ফ্যান, লাইট ও টিউবওয়েল। ঘর নির্মাণে সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন, লোহাগাড়া থানার ওসি মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) কথা হয় মিনু আরা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, পুলিশের উপহারের ঘর পেয়ে আমার মেয়েকে নিয়ে সুখে-শান্তিতে বাস করছি। দীর্ঘদিন পর নিজের একটি স্থায়ী ঘর পেয়ে খুবই আনন্দিত। তিনি আরও বলেন, ১৫ বছর আগে স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে কক্সবাজার থেকে বাপের বাড়িতে চলে আসি। পরবর্তীতে ভাড়া বাসায় থাকতাম। কখনো মানুষের বাড়িতে গৃহস্থালির কাজ, কখনো দিনমজুর হিসেবে কাজ করে সংসার চালাই। স্বল্প আয়ের কাজ করে যেখানে কোনোমতে খেয়ে-পরে জীবন চালাই সেখানে সবসময় বাসা ভাড়া নিয়ে চিন্তায় থাকতাম। একমাত্র মেয়েকে চুনতি সরকারি মহিলা কলেজে ভর্তি করিয়েছি। তারও একটা ভবিষ্যৎ আছে, তবে পেটের কষ্টের চেয়ে ঘরের কষ্ট ছিলো বড়। মিনু আরও বলেন, জীবনে কখনো ভাবিনি আমি যে একটি স্থায়ীভাবে ঘরের মালিক হব। আমাদের জন্য পুলিশ এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুচ্ছাফা যা করল তা কোনোদিন ভোলার নয়। আমাদের চির ঋণী করে দিলেন পুলিশ।
লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি মানবিক কাজ করে থাকেন। লোহাগাড়ায় যাকে ঘর দেওয়া হয়েছে তিনি স্বামী পরিত্যাক্তা নারী। তার স্থায়ী ঘর না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে কষ্টে ছিলেন। কয়েকদিন আগে তাঁকে জায়গার কাগজ এবং নতুন ঘরের চাবি তুলে দেয়া হয়েছে। ##