শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে পারাপার,ভোগান্তিতে এলাকাবাসীরা

প্রকাশিত : ৭:০৬ পূর্বাহ্ন শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

 

রায়হান সিকদার, দেশবাংলা ডটনেটঃ

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের টংকাবতী নদীর ওপর সেতু নেই। এলাকাবাসীর উদ্যোগে নির্মিত কাঠের সাঁকো দিয়ে এলাকার হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। তারা সবসময় ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর ধরে এলাকাবাসীর চাঁদায় নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওই নদী পারাপার হয় পথচারীরা। প্রথম বারে বাঁশের দিয়ে নির্মিত হওয়ার ভেঙ্গে গেলে পরবর্তীতে কাঠের সেঁকো দিয়ে পারাপার করছে এলাকার মানুষ। প্রতিদিন এ পথে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ঘোনা পাড়া, চৌধুরী পাড়া, সৈয়দ পাড়া হারিকুল পাড়া, নুর আহমদ চৌধুরী পাড়া গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সাঁকোটির দিয়ে এপারের শত শত স্কুল,মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে থাকে। এই পার থেকে সুফি ফতেহ আলী ওয়াইসি মহিলা মাদ্রাসা,উত্তর আমিরাবাদ এমবি উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর আমিরাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বার আউলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে যাওয়ার সময় শত শত শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে পারাপার করছে।
এপারে মানুষ আমিরাবাদ বটতলী স্টেশন, পদুয়া বাজারে তাদের রুপনকৃত ফসলাদী বিক্রি করতে, দূরদূরান্ত থেকে সবজি নিয়ে এসে কৃষকেরা সাঁকো পার হতে ভোগান্তির শিকার হন। যান চলাচলের ব্যবস্থা না থাকায় অসুস্থ মানুষকে জেলা শহরে নিয়ে আসতে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।

এলাকার বাসিন্দা নুরুল কবির (৬০) বলেন, ‘আমি কোনো সময় এই সাঁকো দিয়ে হেঁটে যেতে পারি নাই। ভয়ে সব সময় বসে বসে পার হই। একদিন সাঁকো থেকে নিচে পড়ে গিয়েছিলাম।’

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ৭০ ফুট দৈর্ঘ্যের সাঁকোটির দুই পাশে রেলিং নেই। সেটি উঁচু-নিচু অবস্থায় আছে। চলার সময় সেটি দোলে।বার আউলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী মুহাম্মদ রিদুয়ান, রহিম ও জাহেদ বলেন, সাঁকো পার হয়ে কলেজে যেতে হয়। অনেকে প্রায়ই সাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই দ্রুত নতুন একটি ব্রীজ নির্মাণ হলে আমাদের জন্য অনেক বেশী উপকৃত হবে।

আমিরাবাদ ইউপির সাবেক মেম্বার, জাসদ নেতা মুহাম্মদ ইউসুফ জানান,সাঁকো ব্রীজ দিয়ে ঝুঁকিতে পারাপার করতে হচ্ছে। ওপারে গেলে অতি কষ্ঠে আমার রুপনকৃত ক্ষেত খামারে যেতে হয়।

এলাকার বাসিন্দা, চট্টগ্রাম শহরের ব্যবসায়ী ও উত্তর আমিরাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন জানান,আমরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর সহযোগীতা নিয়ে প্রথমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছিলাম সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য। ওটা ভেঙ্গে গেলে কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। সেটিও ভেঙ্গে যাচ্ছে। মাননীয় এমপি মহোদয় ব্রীজটি পরিদর্শন করতে এসেছিলেন। ওনি আমাদেরকে দ্রুত ব্রীজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ এলাকার মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনা করে দ্রুত এখানে সেতু নির্মাণ করা হলে আশপাশের বসবাসরত মানুষের জীবনযাত্রার মান পাল্টে যাবে ও গ্রামীণ অর্থনীতি আরো শক্তিশালী হবে

কাঠের সাঁকো ব্রীজে পথচারী রহিমা বেগম বলেন, শুকনা মৌসুমে সমস্যা কম হলেও বর্ষায় দুর্ভোগে পড়তে হয়। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে সাঁকো ব্রীজ দিয়ে চলাচল করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়। অনেকে সেতু করার আশ্বাস দিলেও কেউ বাস্তবায়ন করেনি। দ্রুত এটি নির্বেঘ্নে চলাচল উপযোগী করা প্রয়োজন।

আমিরাবাদ ইউপির চেয়ারম্যান এসএম ইউনুচ বলেন, ওই স্থানে সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) আবেদন করা হয়েছে। মাননীয় এমপি মহোদয়ের ডিও লেটারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। শীঘ্রই সেতু নির্মাণ করার কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলেও তিনি জানান।

এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী ইফরাত বিন মুনীর বলেন, ওই স্থানে সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

আরো পড়ুন